খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪২৫

প্রতি বর্ষায় একই দুর্ভোগ, অতি বৃষ্টিতে ডুবছে ফসল-ঘের

তালা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় টানা ভারী বৃষ্টিতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে চরম বিপর্যয়ে পড়েছে জনজীবন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কৃষকের কাঁচা ফসল ও শত শত মাছের ঘেরের।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পাকা ও কাঁচা রাস্তায় হাঁটু সমান পানি জমে আছে। অনেক দোকানপাট, বাজার ও বসতবাড়ি তলিয়ে গেছে। ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, আরও দুই দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

টানা বৃষ্টির কারণে তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া, খেশরা, জালালপুর, মাগুরা, খলিশখালী, খলিলনগর, ইসলামকাটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে আমন ধানের বিজতলা, সবজি খেত, মাছের ঘের, পুকুর, কাঁচা রাস্তা ও নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়িতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

মাগুরা ইউনিয়নের মাদরা গ্রামের কৃষক প্রসাদ বাবু বলেন, আমাদের এলাকায় আমন ধানের বিজতলা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। ধান রোপণের জন্য প্রস্তুত রাখা জমিও এখন থমথমে পানির নিচে। সবজির ক্ষেতেও হাঁটুপানি জমে আছে।

দোহার গ্রামের মাছচাষি ছবেদ আলী জানান, ছোট ছোট মাছের ঘেরের বেঁড়ি ভেঙে মাছ বেরিয়ে গেছে। বড় বড় ঘেরের অবস্থাও টলমল। যে কোনো সময় বেঁড়ি ভেঙে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

তালা উপজেলা পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান বলেন, প্রতি বছর বর্ষায় এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়। এবারও অতি বৃষ্টির কারণে তালাসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরকারি নানা প্রকল্পে কালভার্টগুলো সচল রাখার কথা বলা হলেও বাস্তবে অধিকাংশ কালভার্ট বন্ধ থাকে। ফলে জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব হচ্ছে না। পানি কমিটি ও উত্তরনের পক্ষ থেকে বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শালতা নদী খনন, খাস খালগুলো উন্মুক্ত রাখা এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার উনমুক্ত রাখার কথা বলা হলেও সেগুলোর বাস্তবায়ন হয়নি। তাই এ বছরও উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে স্থায়ী জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে।

জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু বলেন, আমাদের ইউনিয়নের অন্তত সাতটি গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে আমন ধানের বিজতলা তলিয়ে গেছে এবং কাঁচা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের কাজ চলছে।

তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার বলেন, ‌‌‌‌জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই আলোচনার মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!